আমাদের যে কোন পণ্য অর্ডার করতে কল বা WhatsApp করুন: +8801673247667

নূহ (আ.) ও মহাপ্লাবনের সত্য কাহিনি – শিরকের শুরু ও ধ্বংসের শিক্ষা

চেষ্টা করা আমাদের কাজ, ফলাফল দেবার মালিক আল্লাহতায়ালা।

আদম (আ.) এর প্রায় ১০০০ বছর পর, ইরাকের একটি শহরে নূহ (আ.) পৃথিবীতে প্রথম রাসূল হিসেবে আগমন করেন। তাঁর আমলে প্রথমবার ইবলিস শয়তান মানুষের মধ্যে শিরকের গোনাহ—অর্থাৎ মূর্তিপূজা—প্রচলনের চেষ্টা করে।

এক সময় ছিল পাঁচজন সৎ ও ঈমানদার ব্যক্তি। তাদের মৃত্যুর পর শয়তান মানুষকে বোঝায়, তাদের স্মরণে মূর্তি তৈরি করো, যাতে তাদের ইবাদতের দৃশ্য দেখে তোমরা আল্লাহর ইবাদতে উৎসাহ পাও।

কিছুদিন এভাবে চলার পর, মানুষ আল্লাহর পরিবর্তে ঐ মূর্তিগুলোকেই উপাসনা করতে শুরু করে। তারা বিশ্বাস করতে থাকে, মূর্তিগুলোই তাদের বিপদে সাহায্য করবে, মনোবাসনা পূরণ করবে। এইভাবেই শিরকের সূচনা হয়।

নূহ (আ.) এর দাওয়াত ও মানুষের প্রতিক্রিয়া

নূহ (আ.) এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি ডাক দেন এবং সতর্ক করে দেন যে শিরক করলে শাস্তি হবে। তিনি বলেন, আল্লাহ তাঁকে রাসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন।

কিছু সাধারণ, নিম্নবর্গের মানুষ তাঁর কথা মেনে নেয়, কিন্তু ধনী, উচ্চপদস্থরা তাঁকে অবজ্ঞা করে। তারা বলে, “তুমি তো আমাদের মতোই মানুষ! ফেরেশতা পাঠালে বুঝতাম তুমি সত্য রাসূল।”

তারা আরও বলে, “আমাদের পূর্বপুরুষেরাও তো মূর্তি পূজা করেছে, তারা কি ভুল ছিল?” ধনীরা নূহ (আ.)-কে প্রস্তাব দেয়—তুমি যদি আমাদের সমান হতে চাও, তবে গরিবদের থেকে দূরে সরে দাঁড়াও।

নূহ (আ.) বলেন, “যারা এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করে, আমি তাদের ত্যাগ করতে পারি না।” এরপর থেকেই তারা তাঁকে পাগল ও মিথ্যাবাদী বলে অপবাদ দিতে থাকে।

৯৫০ বছরের আহ্বান ও ধৈর্য

নূহ (আ.) দীর্ঘ ৯৫০ বছর ধরে দিন-রাত এক আল্লাহর ইবাদতের আহ্বান করেন। কিন্তু মানুষ তাঁর কথা না শুনে কানে আঙুল দিয়ে পালিয়ে যায়। তারা হাসে, উপহাস করে, হুমকি দেয়।

তারা বলে, “তুমি যদি এসব কথা বন্ধ না করো, তবে পাথর মেরে তোমাকে হত্যা করব। তোমার আল্লাহর আযাব দেখাও, যদি সত্যি হয়ে থাকো।”

এই দীর্ঘ বিরোধিতা দেখে নূহ (আ.) আল্লাহর কাছে দোআ করেন—যেন তিনি কুফরিদের ধ্বংস করেন।

মহাপ্লাবনের আদেশ ও প্রস্তুতি

আল্লাহ তায়ালা জানান, তিনি এক মহাপ্লাবন আনবেন এবং নির্দেশ দেন নূহ (আ.)-কে একটি বিশাল নৌকা তৈরি করতে।

এই নৌকায় বিশ্বাসী মানুষ, ও প্রতিটি প্রাণী থেকে একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী সদস্য নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নূহ (আ.) নির্দেশ মতো কাজ শুরু করেন। কাফেররা তাঁকে দেখে উপহাস করে।

আল্লাহ আরও বলেন, “যখন তোমার ঘরের চুলা থেকে আগুনের বদলে পানি বের হতে দেখবে, বুঝবে প্লাবন শুরু হয়েছে।”

প্লাবনের সূচনা ও নৌকায় আরোহন

একদিন সত্যিই ঘরের চুলা থেকে পানি বের হয়। তখন নূহ (আ.) আল্লাহর নামে বিসমিল্লাহ পড়ে বিশ্বাসী মানুষ ও প্রাণীদের নিয়ে নৌকায় ওঠেন।

চার ছেলের মধ্যে তিনজন নৌকায় ওঠে, কিন্তু একজন ছেলে ও তাঁর স্ত্রী বিশ্বাস করেনি। নূহ (আ.) ছেলেকে ডাকে—নৌকায় উঠতে বললে সে বলে, “আমি পাহাড়ে আশ্রয় নেবো।”

নূহ (আ.) বলেন, “আজ আল্লাহর রহমত ছাড়া কেউ রক্ষা পাবে না।” কিন্তু ছেলে তাঁর কথা শোনে না। একটি বিশাল ঢেউ এসে তাকে ডুবিয়ে দেয়।

ধ্বংস ও পরিত্রাণ

প্রবল বৃষ্টি নামে, মাটি ফেটে পানি ওঠে, সমগ্র পৃথিবী প্লাবিত হয়। সব কাফের ধ্বংস হয়ে যায়।

নূহ (আ.) তাঁর স্ত্রী ও ছেলের জন্য কাঁদেন। আল্লাহ বলেন, “তারা তোমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত নয়। তারা কাফের।”

৪০ দিন পরে নূহ (আ.)-এর নৌকা ‘জুডি’ পাহাড়ে এসে থামে। পানি শুকিয়ে যায়।

আল্লাহ আদেশ দেন—নৌকা থেকে আলহামদুলিল্লাহ পড়ে সবাই নামো এবং নতুন জীবন শুরু করো।

উপসংহার

এই কাহিনি আমাদের শেখায়—

  • শিরক কীভাবে শুরু হয়

  • একটি রাসূল কত ধৈর্যের সঙ্গে দাওয়াত দেন

  • আল্লাহর আদেশ অমান্য করলে কী পরিণতি হয়

  • বিশ্বাস, আনুগত্য ও ধৈর্য আল্লাহর রহমত এনে দেয়

এই সত্য ঘটনা কেবল ইতিহাস নয়, আমাদের জীবনের পথনির্দেশও।

Connect With Us

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Mukramin is a online Gift Shop. From where you can grab your best desire through a reasonable price. We are concern about quality & creativity

Head Office

40, 2/A, Babor Road, Mohammadpur, Dhaka-1207. Mobile:01673247667, 01818199858 Email: info@mukramin.com,
©mukramin.com