আমাদের যে কোন পণ্য অর্ডার করতে কল বা WhatsApp করুন: +8801673247667

আদম (আ.) এর সৃষ্টি ও শয়তানের অহংকার: একটি ইসলামিক শিক্ষামূলক সত্য ঘটনা

“জ্ঞানী হওয়া আমাদের উদ্দেশ্য, অহংকারি হওয়া নয়।”

ইসলাম ধর্মে মানব সৃষ্টির ইতিহাস ও শয়তানের জন্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই কাহিনি আমাদের শেখায় বিনয়, আনুগত্য এবং অহংকারের পরিণতি সম্পর্কে। নিচে কোরআন-আধারিত এই সত্য ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।

পৃথিবী, ফেরেশতা ও জ্বিনের সৃষ্টি

বহু বহু বছর আগের কথা, আল্লাহতায়ালা এই মহাবিশ্ব, চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী তৈরী করেছিলেন। তিনি নূর দিয়ে তৈরি করেছেন ফেরেশতাদের এবং আগুনের শিখা থেকে জ্বিন তৈরি করেছেন।

মানুষের জন্য মাটির সংগ্রহ ও আকৃতি নির্মাণ

তারপর একসময় তিনি মানুষ তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি মানুষ তৈরির জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফেরেশতাদের মাটি সংগ্রহ করতে পাঠালেন। এরপর সেই মাটিকে আল্লাহতায়ালা এঁটেলমাটি বানালেন, পরে বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে বানালেন কাঁদামাটি। এরপর সেই কাঁদামাটির দলাটিকে প্রচণ্ড তাপে ঠনঠনে পোড়ামাটি বানালেন।

আদম (আ.) এর সৃষ্টি ও রূহ দান

এই পোড়ামাটি দিয়ে তিনি মানুষের আকৃতি তৈরি করলেন এবং নাম রাখলেন আদম (আ.)। পবিত্র শুক্রবার আল্লাহতায়ালা আদম (আ.) কে তৈরি করেছিলেন।

৪০ বছর তিনি এই আকৃতিটি রেখে দিলেন। এরপর একদিন তাঁর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন আত্মা বা রূহ

  • রূহ মাথায় পৌঁছাতেই আদম (আ.) হাঁচি দিলেন
  • চোখে পৌঁছালে বেহেশতের ফল দেখতে পেলেন।
  • পাকস্থলীতে পৌঁছাতেই ক্ষুধা অনুভব করলেন।
  • তিনি লাফ দিয়ে ফল খেতে গেলেন কিন্তু আত্মা তখনও পায়ে পৌঁছায়নি, ফলে পড়ে গেলেন।

আল্লাহতায়ালা বললেন, “মানুষ অনেক অধৈর্য্য।”

আল্লাহর শিক্ষা ও জ্ঞান প্রদর্শন

আল্লাহ আদম (আ.) ও ফেরেশতাদের কিছু জিনিসের নাম শেখালেন। পরে তিনি যখন তাদের সেই জিনিসগুলোর নাম বলতে বললেন, ফেরেশতারা পারলো না, কিন্তু আদম (আ.) সব জিনিসের নাম বলতে পারলেন
এই ঘটনার কারণে আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদেরকে আদম (আ.)-এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সিজদা করার নির্দেশ দিলেন (উপাসনার সিজদা নয়)। সকল ফেরেশতারা সিজদা করলেন—শুধু ইবলিশ ছাড়া।

ইবলিসের অহংকার ও অমান্যতা

ইবলিশ ছিল জ্বিনদের মধ্যে এমন একজন, যাকে আল্লাহতায়ালা তার অনেক ইবাদতের কারণে ফেরেশতাদের সাথে রাখতেন এবং সম্মান দিতেন।

আল্লাহ ইবলিশকে জিজ্ঞাসা করলেন,

“তুমি কেন সিজদা দিলে না?”
ইবলিশ বলল,
“আমি আগুন থেকে, আর আদম মাটি থেকে। আমি কেন তাকে সিজদা দিবো? আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ।”

এই অহংকার ও তর্কের কারণে আল্লাহ তাকে যে সম্মান দিয়েছিলেন তা কেড়ে নিলেন, এবং কেয়ামতের আগে পর্যন্ত তাকে অভিশপ্ত ঘোষণা করলেন। তখন থেকেই ইবলিশ হয়ে গেল শয়তান

শয়তানের চ্যালেঞ্জ ও আল্লাহর হুঁশিয়ারি

শয়তান বুঝতে পারল যে শেষ বিচারের দিনে তাকে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। তখন সে আল্লাহকে বলল:

“আমি এত বছর ইবাদত করেছি, আর আজ আদমকে সিজদা না করার কারণে আমি আপনার অপ্রিয় হয়ে গেলাম। আপনি আমাকে এমন ক্ষমতা দিন, যাতে আমি মানুষকে খারাপ পথে পরিচালিত করতে পারি, এবং তাদের দোজখে নিয়ে যেতে পারি।”

আল্লাহ শয়তানের এই শেষ অনুরোধ গ্রহণ করলেন এবং তাকে এই বিশেষ ক্ষমতাটি দিলেন

শয়তানের ফাঁদ ও মানুষের সতর্কতা

আল্লাহ মানুষকে সতর্ক করে বললেন:

“যে শয়তানকে অনুসরণ করবে, তাকে শয়তানের সাথেই দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।”

সেই দিন থেকে শয়তান সবসময় চেষ্টা করে যাতে মানুষ ভুল পথে চলে, এবং বেহেশতে যেতে না পারে

আমরা শয়তানকে দেখতে পাই না। কিন্তু সে আমাদের ডানে, বামে, পেছনে এমনকি রক্তপ্রবাহের ভেতরেও প্রবেশ করে। সে ভুল বোঝায়, গুনাহে উৎসাহ দেয়।

তাই আমাদের উচিত:

  • সতর্ক থাকা
  • অহংকার না করা
  • আল্লাহর আদেশ মেনে চলা
  • শয়তানকে পরাজিত করা

উপসংহার: শিক্ষা কী?

এই কাহিনি থেকে আমরা যা শিখি তা হলো—অহংকার আমাদের ধ্বংস ডেকে আনে, এবং আল্লাহর আনুগত্য ও বিনয় আমাদের সফলতার পথে নিয়ে যায়।

“শয়তান জিতে যাক তা নয়, বরং নিজের ঈমানকে জিতিয়ে তুলুন।”

Connect With Us

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Mukramin is a online Gift Shop. From where you can grab your best desire through a reasonable price. We are concern about quality & creativity

Head Office

40, 2/A, Babor Road, Mohammadpur, Dhaka-1207. Mobile:01673247667, 01818199858 Email: info@mukramin.com,
©mukramin.com